ওয়েব হোস্টিং এমন একটি সার্ভিস যেখানে আপনার ওয়েবসাইটটি হোস্ট করতে পারবেন। হোস্টিং এ আপনার ওয়েবসাইটের বিভিন্ন ফাইল, ইমেজ, ভিডিও, কন্টেন্ট গুলো রাখা হয় এবং ওয়েবসাইটটি অনলাইনে অ্যাক্সেসযোগ্য করে তোলে, যাতে ভিজিটররা আপনার ওয়েবসাইটটি সহজেই ভিজিট করতে পারে। সেজন্য আপনাকে অবশ্যই ভালো হোস্টিং কোম্পানী থেকে হোস্টিং সার্ভিস নিতে হবে। তাই আপনার ওয়েবসাইটটি ভালো ভাবে চালানোর জন্য ভালো হোস্টিং সার্ভিসের গুরুত্ব অনেক। আপনি যখন হোস্টিং কোম্পানী থেকে হোস্টিং সার্ভিস নিয়ে থাকেন, তখন তারা আপনাকে তাদের সার্ভারের কিছু জায়গা ভাড়া দেবে। হোস্টিং কোম্পানী শুধু কিছু জায়গায় ভাড়া দেয় না তার পাশাপাশি আপনার সাইটটি কিভাবে নিরাপদ থাকবে সেই সার্ভিস গুলোও হোস্টিং কোম্পানী দিয়ে থাকে।
আমরা অনেকেই হয়তো জানি হোস্টিং কি? এটি কিভাবে কাজ করে? এবং এটি আমাদের কেন প্রয়োজন হয়? কিন্তু, অনেকেই জানিনা যে, কেমন কনফিগারেশন দেখে হোস্টিং নিতে হবে এবং কেমন প্রভাইডার থেকে হোস্টিং সার্ভিস নিলে ভাল সার্ভিস ও সাপোর্ট পাওয়া যাবে। দেশী এবং বিদেশী অনেক হোস্টিং কোম্পানী রয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যে থেকে কিভাবে একটি ভালো কোম্পানী বেছে নিবেন সেটা আপনার জন্য একটু চিন্তাত বিষয় হতে পারে। আপনি যদি আর্টিকেলটি ভালো ভাবে পড়েন তাহলে আপনি খুব সহজেই একটি ভালো হোস্টিং প্রভাইডার বাছাই করতে পারবেন।
প্রথমেই আমাদের জেনে নেওয়া উচিত ওয়েব হোস্টিং কেন প্রয়োজন? হোস্টিং এমন একটি সার্ভিস যার মাধ্যমে ভিজিটররা আপনার ওয়েবসাইট সহজেই অ্যাক্সেস করতে পারে। হোস্টিং প্রভাইডার তার সার্ভার থেকে কিছু জায়গা আপনাকে ভাড়া দেয়। যেখানে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের বিভিন্ন ফাইল, কন্টেন্ট, ইমেজ ইত্যাদি প্রয়োজনীয় জিনিস গুলো রাখতে পারবেন এবং সেগুলো অনলাইনে অ্যাক্সেসযোগ্য।
আপনি যদি একটি ওয়েবসাইট তৈরী করতে চান। তাহলে প্রথমে আপনাকে একটি ডোমেইন নেম এবং হোস্টিং কিনতে হবে। হোস্টিং না কিনা পর্যন্ত আপনার ওয়েবসাইট অনলাইনে কেউ অ্যাক্সেস করতে পারবে না। একটি ভালো ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ভালো হোস্টিং প্রভাইডারের গুরুত্ব অনেক।
হোস্টিং ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই আপনাকে কিছু ব্যয় করতে হবে। দেশে ও বিদেশে অনেক হোস্টিং কোম্পানী আছে। কোম্পানী গুলো ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেজ করে ভিন্ন ভিন্ন দামে তাদের হোস্টিংয়ের প্যাকেজ গুলো বিক্রি করে থাকে। হোস্টিং এর দাম নির্ভর করে মুলত SSD, RAM ও CPU কেমন নিবেন তার উপর। তাই হোস্টিং কেনার আগে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আপনি কোন প্যাকেজের হোস্টিং নিবেন বা আপনার ওয়েবসাইটের জন্য কেমন কনফিগারেশনের হোস্টিং প্রয়োজন। আপনার চাহিদা অনুযায়ী হোস্টংয়ের দাম কম বা বেশী হতে পারে। অবশ্যই ভালো এবং নির্ভরযোগ্য প্রভাইডার থেকে আপনাকে হোস্টিং সার্ভিস নিতে হবে। সেই ক্ষেত্রে সাইবার ডিভলোপার বিডি একটি নির্ভরযোগ্য কোম্পানী। আমরা খুব কম দামে হোস্টিং সার্ভিস প্রভাইড করি। আমাদের বিভিন্ন হোস্টং প্যাকেজের মূল্য সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
শেয়ার্ড হোস্টিং সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং প্রচলিত। সব ধরনের হোস্টিংয়ের মধ্যে থেকে শেয়ার্ড হোস্টিং বেশী ব্যবহার করে। কারণ ছোট বিজনেস, ব্লকসাইট এবং নতুনদের জন্য এটি খুবই ভালো এবং খরচও অনেক কম। ভিপিএস বা ডেডিকেটেড সার্ভার নিতে চাইলে অনেক বেশী খরচ লাগতে পারে। তাই, এদের জন্য Shared Hosting উপযুক্ত। আমাদের শেয়ার হোস্টিং এর প্যাকেজ গুলো কম খরচেই নিতে পারেন। প্যাকেজ গুলো দেখতে আমাদের Shared Hosting এই লিংক থেকে দেখে নিতে পারেন।
VPS হোস্টিং এর জন্য প্রতি মাসে ৭০০ থেকে ২৫০০০ টাকা খরচ হতে পারে। যে ওয়েবসাইটগুলিতে খুব বেশি ট্র্যাফিক আসে বা শেয়ার্ড হোস্টিং প্ল্যানগুলির চেয়ে আরও বেশি SSD, Bandwidth, RAM এবং CPU আরও বেশী প্রয়োজন হয়। এমন ওয়েবসাইট গুলোকে পরবর্তিতে VPS হোস্টিং এ Upgrade করে নিতে হয়। ।শেয়ার্ড আর ডেডিকেটেড হোস্টিং এর মাঝামাঝি অবস্থান ভিপিএস হোস্টিংয়ের। ডেডিকেটেড সার্ভারে সব হার্ডওয়্যার রিসোর্স একা আপনাকে দিয়ে দিবে এবং আপনার সাইট একটি সার্ভারে থাকবে। আর শেয়ার্ড হোস্টিং এ আপনার সাইটের সাথে থাকবে আরো হাজারটা সাইট। ভিপিএস হোস্টিং এ সাধারনত একটা ডেডিকেটেড সার্ভার কয়েকজনকে ভাগ করে দেয়। যেমন ১৬ জিবি র্যামের একটা সার্ভার আপনাকে দিল ৪ জিবি এবং বাকিগুলি আরো ৩ জনকে দিল এভাবে সব রিসোর্স ভাগ করে দেয়। ডেডিকেটেড সার্ভারের মতই মোটামুটি নিজের মত যেকোন সফটওয়্যার ইনস্টল দেয়া যায়। সাধারনত তখনই এই ধরনের হোস্টিং প্যাকেজ নিবেন যখন একটা ডেডিকেটেড সার্ভারের সব রিসোর্স আপনার লাগবেনা, তাহলে আপনার কাজও হবে কিছু টাকাও সেভ হবে।
আপনি যখন আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি ডেডিকেটেড সার্ভার কিনবেন, তখন আপনাকে এটি অন্য কোনো ওয়েবসাইটের সাথে শেয়ার করতে হবে না। যখন আপনার ওয়েবসাইটে থাকা রিসোর্স অনেক বেশি হয়ে যাবে, তখন আপনার একটি ডেডিকেটেড সার্ভার প্রয়োজন হবে, এই সার্ভারের জন্য প্রতি মাসে ৫০০০ থেকে ১০০০০০ টাকা বা তার বেশি খরচ হতে পারে। এটি আপনার নিজস্ব সার্ভার হবে এবং সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আপনি নিজেই করতে পারবেন। যদি আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর আগের চেয়ে বেড়ে যায়, শেয়ার্ড এবং ভিপিএস হোস্টিং এর চেয়ে আরও বেশী SSD, Bandwidth, RAM ও CPU এর প্রয়োজন হয় তাহলে আপনার সাইটের জন্য দ্রূত Dedicated Server নিতে হবে।
ডেডিকেটেড সার্ভার দুই ধরনের হয়ে থাকে
Managed Hosting: হোস্টিং প্রোভাইডাররাই সব করে দেবে যেমন সিকিউরিটি, সার্ভার সেটাপ, নেটওয়ার্ক কনফিগার, কোন সফটওয়ার ইনস্টল দেয়া ইত্যাদি এজন্য তাদেরকে নির্দিষ্ট পরিমান টাকা দিতে হবে।
Unmanaged Hosting: আপনি যদি Server administrator হন অর্থ্যাৎ আপনি যদি নিজেই আপনার এই ওয়েব সার্ভারের সকল কাজ করে নিতে পারেন তাহলে এটা হবে Unmanaged Hosting । এতে আপনার অনেক অর্থ সেভ হবে। সার্ভার ম্যানেজ করা শেখা যায়। এ বিষয়ে আমাদের সাইটে এবং ইউটিউবে অনেক টিউটোরিয়াল আছে ইচ্ছে করলে শিখে নিজের কাজ নিজেই চালাতে পারেন।
ডোমেইন হোস্টীং সার্ভিস নেওয়ার আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরী
আমরা ব্রাউজারে যখন একটা ওয়েবসাইটের ঠিকানা লিখি এবং ইন্টারনেট কানেকশন থাকে তখন ব্রাউজার সেই ঠিকানাটিকে প্রসেস করে একটা সার্ভারে পাঠিয়ে দেয়। সেই সার্ভার তখন রিকোয়েস্ট অনুযায়ী নির্দিষ্ট পেজটি ব্রাউজারে পাঠিয়ে দেয় এবং আমরা তখন পেজটি দেখতে পাই। তো এই সার্ভারটি যদি কখনও বন্ধ থাকে এবং সেই সময় যদি কোন ইউজার রিকোয়েস্ট পাঠায় তাহলে ইউজার দেখবে সাইট টি কাজ করছেনা কারণ সার্ভার ডাউন। এমন প্রভাইডার থেকে সার্ভার নিতে হবে যাদের সার্ভার ২৪ ঘন্টা সচল থাকবে, কেননা আপনার সাইটের কোটি কোটি ভিজিটর থাকতে পারে এবং আপনি জানেন না যে কে কখন আপনার সাইটে ঢুকবে। সেই জন্য আপনাকে সব সময় ভালো সার্ভিস দেয় এমন প্রভাইডার থেকে হোস্টিং সার্ভিস নিতে হবে।
হোস্টিং অফারঃ বিভিন্ন কোম্পানী তাদের প্যাকেজ গুলো বিভিন্ন ক্যাটাকরিতে সাজাইছে। সেই প্যাকেজ গুলো সেল করার জন্য অনেক সময় কোম্পানী গুলো বিভিন্ন অফার দিয়ে থাকে এবং প্রোমো কোড ব্যবহার করে গ্রাহকরা সেই অফার গুলো নিতে পারে। কিন্তু কিছু কোম্পানী আছে ৫০% এর বেশী অফার দিয়ে থাকে, সেই কোম্পানী গুলো মুলত মার্কেট নষ্ট করছে। কিছু নতুন কোম্পানী এবং যাদের সার্ভিস ভালো না এই ধরনের কোম্পানী গুলোই ৫০% বেশী অফার গুলো দিয়ে থাকে। কম টাকায় সার্ভিস পাওয়া যায় কিন্তু সেইটা সবসময় ভাল হয় না, এই কথা মাথায় রেখে আমাদেরকে হোস্টিং প্রভাইডার বাছাই করতে হবে।
নিরাপত্তাঃ বিভিন্ন সাইবার ক্রাইম থেকে আপনার ওয়েবসাইটকে নিরাপত্তা দিতে পারবে এমন কোম্পানী বাছাই করতে হবে।
লোড টাইমঃ আপনার ওয়েবসাইটের বিভিন্ন কারণে লোডিং স্পিড বেশী হতে পারে। তার মধ্যে হোস্টিং একটি কারণ, হোস্টিং প্রভাইডারের সার্ভারে যদি প্রবলেম থাকে তাহলে আপনার সাইট লোড হতে সময় নিবে।
প্রযুক্তিগত সহযোগীতাঃ যেকোনো প্রভাইডার থেকে হোস্টিং সার্ভিস নেয়ার পরবর্তিতে ওয়েবসাইট পরিচালনার সময় আপনি বিভিন্ন সমস্যায় পরতে পারেন। আপনার প্রযুক্তিগত দক্ষতা না থাকার কারণে আপনি সে সমস্যা গুলো সমাধান করতে পারবেন না। এই ধরনের প্রযুক্তিগত সহযোগীতা ২৪ ঘন্টা পাবেন এমন কোম্পানী থেকে সার্ভিস নিবেন।
সাপোর্ট টিমঃ বেশিরভাগ ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি ফোন, চ্যাট বা টিকিটের মাধ্যমে তাদের গ্রাহকদের সার্ভিস দিয়ে থাকে। কিন্তু তাদের সাপোর্ট টিম কত দ্রুত সমাধান দিতে পারে এবং তাদের সহায়তা দল তাদের সার্ভিস সম্পর্কে কতটা জানে তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ব্যাকআপঃ আপনার ওয়েব হোস্টিং কোম্পানিকে হয় নিয়মিত আপনার সাইটের ব্যাকআপ নিতে হবে অথবা আপনি নিজে ব্যাকআপ নিতে পারবেন এমন সুবিধা থাকতে হবে। আপনার ওয়েবসাইটের ব্যাকআপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি আপনার ওয়েবসাইটকে পরবর্তীতে চালু রাখতে সাহায্য করে। এটি আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটের সমস্ত ডেটা হারানো থেকে বিরত রাখে।
SSL সার্টিফিকেটঃ কিছু ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি তাদের প্যাকেজে ফ্রিতে SSL সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে। এটি আপনার সাইটকে HTTP থেকে HTTPS পরিনত করে, এখানে “S” অর্থ সিকিউর। এবং আপনার ওয়েবসাইটের URL এর আগে লক আইকন দেখতে পাবেন। তাই যারা SSL সার্টিফিকেট দেয় এমন প্রভাইডার বাছাই করবেন।
আপনার সাইট বা বিজনেস বৃদ্ধি করার জন্য একটি ভালো হোস্টিং প্রভাইডারের গুরুত্ব অনেক। তবে, আপনার সাইটের জন্য ওয়েব হোস্টিং বেছে নেওয়ার আগে এই বিষয়গুলি আপনাকে অবশ্যই যাচাই বাছাই করে নিতে হবে। আপনার এই সার্ভিস গুলো পেতে বর্তমানের সেরা ওয়েব হোস্টিং কোম্পানী CyberDeveloperBD থেকে নিতে পারেন। এটি একটি বাংলাদেশের সনামধন্য ডোমেইন হোস্টিং প্রদানকারি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটি ২০১২ সাল থেকে সার্ভিস প্রদান করে আসছে, এক্ষেত্রে প্রতারিত হওয়ার কোন সুযোগ নাই।