বর্তমানে ইন্টারনেট মানুষের জীবনকে অনেক সহজ করেছে। বর্তমানে সবকিছুই অনলাইন প্লাটফর্মে ধাবিত হচ্ছে। তাই অনলাইনে কাজ করে আয় করার প্রচুর সুযোগ রয়েছে। মানুষ এখন অনলাইনে ইনকামের জন্য নানা কৌশল প্রয়োগ করছে। অনলাইনে ইনকামের অনেক পথও তৈরি হয়েছে। তবে অনলাইনে কাজ করে আয় করতে গেলে কোন প্ল্যাটফর্ম ধরে এগোচ্ছেন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের মাধ্যমেই সফলতা অর্জন সম্ভব। এমন না যে, আজকে শুরু করলাম আর কাল থেকে টাকা আসা শুরু হবে।
অনলাইনে আয় করার নানা সুযোগ থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রতারণার মুখে পড়তে হতে পারে। তাই এ ধরনের প্রতারণামূলক কাজের ক্ষেত্র থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে হবে। কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম (Platform), ওয়েবসাইট (Website) ও রিসোর্স (Resource) আছে, যা কাজে লাগিয়ে অনলাইনে আয় করতে পারবেন। তো চলুন জেনে নেয়া যাক এসব সম্পর্কে:
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং(Freelancing) সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইনে ইনকাম করার মাধ্যম। ফ্রিল্যান্সিং(Freelancing) এমন একটি মুক্ত পেশা যেখানে আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে অনলাইনে ইনকাম (Online income) করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং(Freelancing) করে অনলাইন ইনকাম করতে চাইলে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং(Freelancing) প্লাটফর্মে যেমন: Upwork, Fiverr, Toptal, PeoplePerHour, Freelancer ইত্যাদিতে অ্যাকাউন্ট খুলে আপনার পোর্টফলিও (Portfolio) সাজিয়ে ফেলুন এবং স্কিল ও এক্সপেরিয়েন্স অনুযায়ী কাজের জন্য অ্যাপ্লাই করুন। এরপর বায়ার তার ডিমান্ড এবং আপনার স্কিল যাচাই করে আপনাকে কাজ দিবে। ২০২৩ সালে্র প্রতিবেদন অনুযায়ী, জানুয়ারিতে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা সাড়ে ছয় লক্ষের বেশি এবং বাংলাদেশে প্রতি বছর বার্ষিক ১০ হাজার ৬০০ কোটি টাকার মতো আয় করছে ফ্রিল্যান্সার সেক্টর থেকে।
আপনি কি লেখালেখি পছন্দ করেন। অনেকে শখ করে অনেক বিষয়ে লেখেন। কিন্তু শখের বিষয়টি যদি পেশাগত কাজে লাগাতে পারেন, তবে অনলাইনে আয় করতে পারবেন। ঘরে বসে আয় করার আরেকটি জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ব্লগিং । আপনি লেখালেখিতে এক্সপার্ট হলে অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে লেখা আপনার জন্য একটি অনলাইনে ইনকাম ( Online income ) করার সবচেয়ে ভালো উপায় হতে পারে। এর জন্য প্রাথমিকভাবে আপনার ব্লগ সাইট তৈরি করতে হবে। ব্লগ( Blog ) লিখে আয় করতে চাইলে নিজে ডোমেইন ও হোস্টিং কিনে ব্লগ সাইট তৈরি করে লিখতে পারেন। আপনি Cyber Developer BD থেকে প্রয়োজনীয় ডোমেইন ও হোস্টিং নিতে পারেন। Cyber Developer BD বাংলাদেশের সেরা ডোমেইন হোস্টিং কোম্পানী। ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশের আইটি সেক্টরে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন, হোস্টিং সার্ভিস, ভিপিএস, ওয়েব ডিজাইন, ডেডিকেটেড সার্ভার এর জন্য একটি বিশ্বস্ত প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠান। ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress), টাম্বলার ( Tumbler ) ও ব্লগার (Blogger) প্ল্যাটফর্মে বিনামূল্যে ব্লগ লেখা যায়।
Upwork, Fiverr সহ বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মে কনটেন্ট ও ব্লগ রাইটারদের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ইংরেজি লেখায় দক্ষতা থাকলে এই ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মগুলোতে কাজ পাওয়াটা আপনার জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে। কাজের মানের ভিত্তিতে প্রতি ১০০০ ওয়ার্ডের জন্য কনটেন্ট রাইটাররা $৫ থেকে $১০০ পর্যন্ত পেয়ে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে লেখালিখি করে আপনি অনলাইনে টাকা আয় করতে পারেন।
যাঁরা ব্লগ লিখে আয় করতে পছন্দ করেন না, তাঁরা ক্যামেরার সাহায্য নিয়ে ভিডিও থেকে আয় করতে পারেন। এ জন্য অবশ্য সৃজনশীল আর ভালো সম্পাদনা জানতে হবে। নিজের ইউটিউব চ্যানেল খুলে তাতে ভিডিও আপলোড করে সেখান থেকে আয় করতে পারেন। আপনার চ্যানেল কোন ক্যাটাগরির (Category) এবং তাতে কোন ধরনের ভিডিও রাখবেন, তা আগেই ঠিক করে রাখুন। যে বিষয়ে মানুষের আগ্রহ বেশি, সেই বিষয়ে ভিডিও না রাখলে মানুষ তা দেখবে না। ভিডিও না দেখলে আয় হবে না। বিষয়টি অনেকটাই ব্লগের মতো। তবে এ ক্ষেত্রে কনটেন্ট হচ্ছে ভিডিও। চ্যানেলের সাবস্ত্রাইবার ও ভিডিওর ভিউ বাড়লে আয়ের সম্ভাবনা বাড়বে। ইউটিউব থেকে অনলাইন ইনকাম করার জন্য আপনার চ্যানেলে অন্তত এক হাজার সাবস্ত্রাইবার থাকতে হবে। যদিও সাবস্ক্রাইবার প্রতি আপনি কোনো টাকা পাবেন না। তবে যত বেশি সাবস্ক্রাইবার থাকবে রোজগারের সম্ভাবনা ততই বেশি হবে। আপনি চাইলে কোনো ব্র্যান্ডের সঙ্গেও কোলাবোরেশান করে ইনকাম করতে পারবেন। এক হাজার সাবস্ক্রাইবারের সঙ্গে আয় শুরুর জন্য বিগত ১২ মাসে প্রয়োজন হবে চার হাজার ঘণ্টা ভিউ। যত বেশি ভিউ পাবেন রোজগারের সম্ভাবনা ততই বাড়তে থাকবে। তবে আপনার ভিডিওর উপরে দেখানো লিঙ্কে ক্লিক করে কেউ সম্পূর্ণ বিজ্ঞাপন দেখলে তবেই রোজগার হবে ইউটিউব থেকে।
YouTube Studio থেকে Monitization বিভাগে গিয়ে চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেখানো সিলেক্ট করতে পারবেন। এখানেই ড্যাশবোর্ডে মাসে কত রোজগার হয়েছে দেখে নিতে পারবেন। নিয়মিত ভালো মানের কন্টেন্ট তৈরি করতে পারলে ইউটিউব আপনার জন্য হবে একটি আদর্শ অনলাইনে ইনকাম করার মাধ্যম।
ফেসবুক (Facebook), টুইটার (Twitter), ইনস্টাগ্রাম (Instagram), স্ন্যাপচ্যাট (Snapchat) এখন আর শুধু বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম নয়। এগুলো কাজে লাগিয়ে আয় করতে পারেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্র্যান্ডের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া পরিকল্পকদের প্রচুর অর্থ দেওয়া হয় তাদের ব্র্যান্ডের প্রচার করার জন্য। অনলাইনে গ্রাহক টানা, প্রচার করার জন্য অবশ্য সৃজনশীলতা দরকার। বিভিন্ন পোস্ট তৈরি, ভিডিওর মাধ্যমে ফেসবুক বা অন্যান্য মাধ্যমে প্রকাশ করে তা ভাইরাল করতে পারলে ভালো অর্থ আসে। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social media) ফ্যান-ফলোয়ার তৈরিসহ তাঁদের ধরে রাখতে প্রচুর ধৈর্য ও প্রাসঙ্গিক বিষয় হওয়া জরুরি।
পেইড সার্ভে (Paid Servey)
এমন অনেক ধরনের পেইড সার্ভে আছে, যেগুলো থেকে আপনি অনলাইনে ইনকাম (Online Income) করতে পারবেন। মূলত কোনো কোম্পানি থেকে তাদের প্রোডাক্ট নিয়ে মানুষের ফিডব্যাক কী, নতুন প্রোডাক্টে কী কী থাকা উচিত, এসব জানার জন্য সার্ভে করা হয়। অনলাইন সার্ভে করে টাকা ইনকাম করার কিছু ওয়েবসাইট হলো Viewpoint Panel, neobux, Opinion Now ইত্যাদি। এই কাজের জন্য আপনার মোবাইল বা কম্পিউটার হলেই চলবে। কিন্তু একটি পেইড আইপি লাগবেই, ফ্রি ভিপিএন দিয়ে বেশি দিন কাজ করতে পারবেন না।
ওয়েবসাইট (Website)
অনলাইনের কাজের ক্ষেত্রে ওয়েব ডিজাইনের চাহিদা ব্যাপক। কোনো প্রজেক্টে ২০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত সহজে আয় করা যায়। সব ব্যবসায়ী প্রযুক্তিপ্রেমী নন। নিজেদের ওয়েবসাইট তৈরিতে তাঁদের ওয়েব ডিজাইনারের (Web designer) দরকার পড়ে। যাঁরা ওয়েব ডিজাইনার (Web designer) হিসেবে কাজ করতে চান নিজেদের ওয়েবসাইট খুলে সেখান থেকেই ছোট ব্যবসা দাঁড় করাতে পারেন। ওয়েবসাইট তৈরিতে এখন কোডিং আর ওয়েব ডিজাইন দুটিই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া ওয়েবসাইট ব্যবস্থাপনা ও আপডেটের জন্যও ওয়েব ডিজাইনারকে দরকার পড়ে। ফলে ডিজাইনারকে বসে থাকতে হয় না। ক্লায়েন্ট ও কাজের ওপর ভিত্তি করে ওয়েব ডিজাইনারের আয় বাড়তে থাকে। আপনি যদি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন তাহলে এটি আপনার জন্য হতে পারে একটি অনলাইনে ইনকাম করার উপায়। আপনি চাইলে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে অন্যের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করে অনলাইন ইনকাম করতে পারেন, অথবা নিজে ওয়েবসাইট তৈরি করেও তা বিক্রি করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনার সাইটে যদি ভালো ট্রাফিক থাকে, তাহলে ওয়েবসাইটের দামও বেশি পাবেন।
এছাড়াও আপনারা Cyber Developer BD থেকে ওয়েব ডিজাইন সার্ভিস নিতে পারেন। Cyber Developer BD আপনাকে দিচ্ছে অত্যন্ত সাশ্রয়ী প্যাকেজে আপনার ওয়েবসাইট তৈরী করার সুযোগ। ওয়েবসাইট তৈরী করুন আর আপনার ব্যবসাকে কয়েকগুনে প্রসারিত করুন। এছাড়াও ওয়েবসাইটে গুগল এডস, ইজোয়িক, এডস্টেরা ব্যবহার করেও আপনি অনলাইনে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। গুগল এডসেন্স থেকে প্রতি ক্লিকে কত ইনকাম হয় এটাও নির্দিষ্ট নয়। তবে বিভিন্ন দেশ ভেদে প্রতি ক্লিক এর মূল্য $০.০১ ডলার থেকে শুরু করে $১০০ ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এটা নির্ভর করে আপনার কনটেন্ট কোয়ালিটি, কনটেন্টের ধরন এবং কান্ট্রি অনুযায়ী। একটি সাধারণ ওয়েবসাইট বানাতে বেশি কিছু প্রয়োজন হয় না। শুধু ডোমেইন এবং হোস্টিং হলেই ওয়েবসাইট তৈরি করা সম্ভব। এজন্য প্রথমে আপনাকে একটি হোস্টিং কিনতে হবে এবং একটি ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করে তারপর ওয়েবসাইট বানাতে হবে।
ওয়েবসাইট তৈরি করে অনলাইন ইনকামের (Online Income) আরেকটি জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। এই পদ্ধতিতে আয়ের ক্ষেত্রেও নিজের ওয়েবসাইট বা ব্লগ প্রয়োজন। যখন ওয়েবসাইট বা ব্লগ চালু হবে, তখন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লিংক তাতে যুক্ত করতে পারবেন। যখন আপনার সাইট থেকে ওই প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবা কোনো দর্শক কিনবেন, তখনই আপনার আয় আসতে শুরু করবে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং -এর মাধ্যমে আপনি মূলত একজন থার্ড-পার্টি হিসেবে আপনার ওয়েবসাইটে বিভিন্ন প্রোডক্টের প্রমোশন করে তা বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। কোনো কোম্পানির প্রোডাক্ট সেল করে দিলে সেই কোম্পানির পণ্য বিক্রয়ের উপর সাধারণত ২% থেকে ৭০% পর্যন্ত কমিশন প্রদান করে থাকে। আপনার যদি প্রফেশনাল মানের একটি ওয়েবসাইট থাকে এবং সেটিতে যদি ভালো ট্রাফিক আসে, তাহলে আপনি চাইলেই যে কোন অ্যাফিলিয়েট লিংক বসিয়ে প্রোডাক্ট বিক্রি করে অনলাইন ইনকাম করতে পারবেন। আমাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বাংলাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি অনলাইনে ইনকাম করার উপায়। এই অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইটগুলো আমাজনের বিভিন্ন পণ্যের ভালো দিকগুলো তুলে ধরে তা বিক্রি করার চেষ্টা করে থাকে। পণ্য বিক্রি হলেই পাবেন কমিশন! আপনার প্ল্যাটফর্মের ধরন যেমনই হোক না কেনো, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে অনলাইনে ইনকাম করা সম্ভব। ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক প্রোফাইল, এমনকি ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমেও রেফারেল বা অ্যাফিলিয়েট ইনকাম করা সম্ভব।
এছাড়া, আপনি Cyber Developer Bd এর অ্যাফিলিয়েট পার্টনার হতে পারেন। Cyber Developer Bd এর অ্যাফিলিয়েট সিস্টেম আপনার ও আপনার ভিজিটর উভয়ের জন্যেই চমৎকার সুযোগ। কারন আপনার ভিজিটর পাচ্ছে দেশের সেরা ডোমেইন ও হোস্টিং সার্ভিস এবং আপনি পাচ্ছেন প্রতিটি সেল থেকে লাইফটাইম আর্নিং করার এর সুযোগ। কারন হোস্টিং একটি রিনিউয়েবল সার্ভিস। তাই যতদিন আপনার কাস্টোমার আমাদের কাছে থাকবে ও তার সার্ভিস রিনিউ করবে আপনিও ততদিন পর্যন্ত তার কমিশন পেতে থাকবেন। তাই যতই দিন যেতে থাকবে এবং আপনার কাস্টমার সংখ্যা বাড়তে থাকবে, আপনার আর্নিং এর পরিমানও ততই গ্রো হতে থাকবে। প্রতিটি সেল থেকে পাবেন ৫% থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩০% পর্যন্ত অ্যাফিলিয়েট কমিশন শেয়ার যা অন্যন্য যেকোন অ্যাফিলিয়েট থেকে অনেক বেশি রেভিনিউ দেবে আপনাকে।
একটি ওয়েবসাইট বা অ্যাপ কেমন কাজ করছে, ভিজিটররা সঠিক সেবাটা পাচ্ছেন কিনা তা দেখার জন্য তৃতীয় পক্ষ হিসেবে একজন ওয়েবসাইট ও অ্যাপ টেস্টার কাজ করেন। আর এই ওয়েবসাইট ও অ্যাপ টেস্টিং করেও অনেকে অনলাইন ইনকাম করে থাকেন।Usertesting.com, Loop11.com, Test.io এগুলো বেশ জনপ্রিয় অ্যাপ টেস্টার ওয়েবসাইট। অনেক ওয়েবসাইট ভিজিট করার সময় দেখা যায় লোড হতে সময় লাগছে, কিংবা অ্যাপটা ক্রাশ করছে। এসব ঘটনা হরহামেশাই ঘটে থাকে, যার কারণে টেস্টারদের চাহিদা অনেক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসব অনলাইন কাজ করে ঘন্টায় ১০-২০ ডলার আয় করা যায়।
আপনি যদি আপনার তোলা কোনো ছবি অনলাইনে বিক্রি করতে চান তাহলে তার জন্য রয়েছে নানান ইমেজ শেয়ারিং বা স্টক ইমেজ সাইট। এই সাইটগুলোতে আপনি আপনার ছবি বিক্রি করার জন্য আপলোড দিতে পারবেন। তবে ছবিগুলো হতে হবে ভালো মানের, হাই রেজুলেশনের। ছবির মাধ্যমে টাকা ইনকাম করার ওয়েবসাইট হলো যেমন; iStock, Shutterstock ইত্যাদি। এসব ওয়েবসাইটে কাজ করতে চাইলে প্রথমেই আপনাকে ওয়েবসাইটে একাউন্ট খুলে আপনার তোলা ছবি আপলোড করতে হবে। তারপর আপনার ছবির কোয়ালিটি, রেজুলেশন ইত্যাদি বিষয় যাচাই-বাছাই করে আপনার প্রোফাইলটি ঐ ওয়েবসাইটে অনুমোদন দেওয়া হবে। প্রোফাইল অনুমোদন পাওয়ার পর আপনি সেখানে আপনার তোলা ছবি আপলোড করতে পারবেন। তবে কর্তৃপক্ষ প্রথমে আপনার আপলোড করা প্রতিটি ছবিকে যাচাই করবে, তারপরেই ছবিগুলো আপলোড হবে এবং সবাই আপনার ছবি দেখতে পারবে। অনেক বড় বড় কোম্পানি আছে যাদের বিভিন্ন কারণে নানান ছবির দরকার হয়। তখন তারা এসব মার্কেটপ্লেস থেকে ছবি কিনে নিয়ে তাদের কাজে ব্যবহার করে। সাধারণত এই ওয়েবসাইটগুলো প্রতি সেলের জন্য ফটোগ্রাফারদের ৩০-৭০% কমিশন দিয়ে থাকে।
যাদের লেখালেখি করার ইচ্ছে বা অভিজ্ঞতা আছে, তারা খুব সহজেই অ্যামাজন কিন্ডলের সাহায্য লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে আর্টিকেল পাবলিশ করতে পারবে। অ্যামাজন Kindle Direct Publishing এর সাহায্যে আপনি খুব সহজেই যেকোনো বই ডিজিটালি লিখে তা পাবলিশ করতে পারবেন। অ্যামাজনের গ্লোবাল নেটওয়ার্ক ও অ্যামাজনের ই-কমার্সের মাধ্যমে খুব দ্রুত ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে অনলাইনে অসংখ্য মানুষের কাছে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা যায়। আপনি নিজে Amazon KDP- এর সাহায্যে নানান ক্যাটাগরির বই প্রকাশ করতে পারবেন। আর বইয়ের দামটাও নির্ধারণ করবেন আপনি নিজেই। বই বিক্রির টাকা আপনার পেপ্যাল অথবা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে আসবে।
আপনি যদি শুদ্ধ ভাষায় সুন্দর করে গুছিয়ে কথা বলতে পারেন, তাহলে নানান জায়গায় ভয়েস ওভার আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করে অনলাইনে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। অডিওবুক, ভিডিও কন্টেন্ট, অ্যানিমেশন, অ্যাডভার্টাইজমেন্ট, প্রোডাক্ট ভিডিও, অডিও গাইড ইত্যাদি জায়গায় ভয়েস আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করে অনলাইনে ইনকাম করার সুযোগ রয়েছে। লোকাল মার্কেটপ্লেসে আপনি প্রতি মিনিটের জন্য ৩০-৬০ টাকা পেতে পারেন। আর ফাইভারে কাজ করলে অর্থটা ৫ থেকে ৫০ ডলার অবধি যেতে পারে। ভয়েস ওভার আর্টিস্ট হিসেবে সুন্দর স্বর ও শুদ্ধ উচ্চারণ ছাড়া প্রয়োজন রেকর্ডিংয়ের জন্য একটি ভালো মানের মাইক্রোফোন। এরপর রেকর্ডিংটা এডিট করে বায়ারকে পাঠিয়ে দিলেই কাজ শেষ।
অনলাইনে ইনকাম করার একটি পপুলার উপায় হলো ডোমেইন ফ্লিপিং। অর্থাৎ একটি ডোমেইন কিনে পরবর্তীতে সেটিকে বেশি দামে বিক্রি করা। এজন্য প্রথমে আপনাকে ডোমেইন সম্পর্কে ভালোমত রিসার্চ করতে হবে। যেসব ডোমেইন এর চাহিদা ও দাম বেশি সেগুলো জানতে হবে। এরপর আপনাকে একটি ডোমেইন নেম কিনে নিতে হবে। খুব আকর্ষণীয় এবং ভালো নিশের কিছু ডোমেইন কিনে রাখতে হবে। তবে এক্সপায়ারড হয়ে যাওয়া ডোমেইন কেনাই বেশি লাভজনক। আপনি চাইলে ডোমেইনটি দ্রুত বিক্রি করে ফেলতে পারেন, আবার অনেকদিন এটাকে নিজের কাছে রেখে পরবর্তীতে বেশি দামে বিক্রয় করতে পারেন।
আপনি যদি শিক্ষক হন, তবে অনলাইনে শিক্ষকতা করতে পারেন। অনলাইন টিউটরদের এখন অনেক চাহিদা এবং এর মাধ্যমে সব বয়সী শিক্ষার্থীদের আপনি শিক্ষা দিতে পারবেন। বিভিন্ন ওয়েবসাইটে অনলাইন টিউশনির সুযোগ রয়েছে, যেখানে সুবিধামতো সময়ে পড়াতে পারেন। আবার চাইলে নিজেই একটা কোর্স চালু করে ফেলতে পারেন।
বিভিন্ন দক্ষতার ভিত্তিতে ভার্চ্যুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দেয় প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ফোন কল, ই-মেইল যোগাযোগ, ইন্টারনাল রিসার্চ, ডেটা এন্ট্রি, এডিটিং, রাইটিং, ব্লগ, গ্রাফিকস, টেক সাপোর্ট, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবস্থাপনার মতো কাজ থাকে। Assistant Match, 24/7 Virtual Assistant, Freelancer.com, People Per Hour, Upwork এর মতো ইনকাম করার ওয়েবসাইট গুলোতে ভার্চ্যুয়াল সহকারী হয়ে অনলাইন ইনকাম করার সুযোগ পাওয়া যায়। এছাড়াও বিভিন্ন গ্রুপে সেকেন্ডহ্যান্ড বই বিক্রি করা, অনুবাদ ও প্যারাকটিকাল লিখে দেওয়ার মাধ্যমেও অনলাইনে খুব সহজেই অর্থ উপার্জন করা যায়।
অনেক ওয়েবসাইট আছে, যাতে রাখা বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলে আপনাকে অর্থ দেওয়া হবে। এ ধরনের সাইটকে পিটিসি সাইট বলে। প্রকল্প শুরুর আগে নিবন্ধন করতে হয়। তবে মনে রাখতে হবে পিটিসি সাইটগুলো বেশির ভাগ ভুয়া হয়। তাই কাজের আগে নিশ্চিত হতে হবে সেটি রিয়েল সাইট কি না। অনেক সময় বন্ধুকে রেফারেন্স দিয়ে আয় করতে পারেন।