আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব মূলত ব্লগার ( Blogger ) এবং ওয়ার্ডপ্রেস ( WordPress ) এর মধ্য কোন প্ল্যাটফর্মটি আপনার জন্য বেস্ট হবে। আর ব্লগার ( Blogger ) এবং ওয়ার্ডপ্রেস ( WordPress ) কোনটিতে আপনি কি কি সুবিধা পাবেন এবং কি কি পাবেন না।
যখনই ব্লগ বা ব্লগিং শব্দটা উচ্চারিত হয় তখন সর্বপ্রথম আমাদের মনে যে নাম দুটি চলে আসে তা হলো “ওয়ার্ডপ্রেস” এবং অন্যটি “ব্লগার” বা “ব্লগস্পট”। এছাড়াও উইক্স, টাম্বলার দিয়েও আপনি ব্লগিং করতে পারেন।ব্লগিং (Blogging) এর ক্ষেত্রে, ইন্টারনেটে থাকা মোট ওয়েবসাইট গুলির মধ্যে ৪০% ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress) ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। এবং ১% ওয়েবসাইট Blogger বা blogspot ব্যবহার করে তৈরি করা । যারা নতুন ব্লগ শুরু করার চিন্তা করছেন তারা প্রায়ই একটি বিষয় নিয়ে চিন্তিত থাকেন তা হলো ব্লগিং প্লাটফর্ম হিসেবে কোনটা বেছে নিবেন, “ওয়ার্ডপ্রেস” নাকি “ব্লগার“।
অনেক সময় দেখা যায় সঠিক দিক-নির্দেশনার অভাবে বা প্লাটফর্মগুলোর সুবিধা-অসুবিধাগুলো না জেনেই ব্লগিং শুরু করার ফলে পরবর্তীতে আফসোস করতে থাকেন। এমনকি অনেকে ব্লগিং করাই ছেড়ে দেন।
হয়তো তার দরকার ছিলো ব্লগস্পট কিন্তু শুরু করেছেন ওয়ার্ডপ্রেসে অথবা ওয়ার্ডপ্রেস থেকে শুরু করলে ভালো করতেন কিন্তু ব্লগটা এখন ব্লগারে। এখানে আমরা ওয়ার্ডপ্রেস হিসেবে wordPress.org এবং blogger.com এর মধ্যে তুলনা আলোচনা করবো। আমরা মূলত কয়েকটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে সিলেক্ট করবো কোন প্লাটফর্মটি ব্লগিং শুরু করার জন্য ভালো হবে।
ব্লগার এর পরিচয়:
ব্লগার হচ্ছে বিশ্বখ্যাত টেক জায়ান্ট গুগল (Google) কর্তৃক পরিচালিত নিজস্ব কোম্পানি ও ফ্রি ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম। তবে সর্বপ্রথম পায়রা ল্যাব ( Pyra Labs ) ১৯৯৯ সালে এটি তৈরি করে এবং প্রথমদিকে এর নাম ছিল ব্লগস্পট। এই ব্লগস্পট ছিল ইন্টারনেট এর সর্বপ্রথম একটি ফ্রি ব্লগ পোস্টিং প্ল্যাটফর্ম। ২০০৩ সালে গুগল এর ভবিষ্যৎ চাহিদার কথা চিন্তা করে পায়রা ল্যাব থেকে এটি কিনে নেয়।
অতঃপর ২০০৬ সালে ব্লগস্পটকে গুগল তাদের নিজস্ব সার্ভার এর আওতায় নিয়ে আসে এবং একে একটি ফ্রি ব্লগিং প্ল্যাটফর্মে পরিণত করে। গুগল পরবর্তীতে এর নাম ‘ব্লগস্পট’ থেকে ‘ব্লগার’ করে। ব্লগ দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করতে হলে আপনার অবশ্যই একটি জিমেইল একাউন্ট (Gmail account) প্রয়োজন হবে।
ওয়ার্ডপ্রেস এর পরিচয়:
ওয়ার্ডপ্রেস হলো পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ( CMS ) ওপেন সোর্স সফটওয়্যার। বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় ৪০ শতাংশ ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরী ও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ওয়ার্ডপ্রেস মূলত পিএইসপি ( PHP ) ও মাইএসকিউএল ( MYSQL ) দিয়ে তৈরী করা। কোনো রকম প্রোগ্রামিং জ্ঞান ছাড়াই ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট চালানো যায়। প্রথমদিকে ওয়ার্ডপ্রেস শুধুমাত্র ব্লগ সফটওয়্যার হিসেবে পরিচিতি লাভ করলেই বর্তমানে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে যেকোন ধরণের ওয়েবসাইট তৈরী করা যায়। মূলত ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরির জন্য ২০০৩ সালের ২৭ মে প্রতিষ্ঠাতা ম্যাট মুলেনওয়েগ এই বিশেষ কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ‘ওয়ার্ডপ্রেস’ কে রিলিজ করেন।
যেখানে ব্লগার গুগল এর সার্ভারেই হোস্টেড, সেখানে ওয়ার্ডপ্রেস কে WordPress.org থেকে ডাউনলোড করে নিজস্ব ওয়েব হোস্টিং বা ওয়েব সার্ভারে ইন্সটল করতে হয়। ওয়ার্ডপ্রেসকে বর্তমানে পৃথিবীর সেরা ওয়েব কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
মালিকানা
Blogger.com অনলাইন বিশ্বখ্যাত টেক জায়ান্ট গুগল (Google) কর্তৃক পরিচালিত নিজস্ব কোম্পানি । যার সম্পূর্ণ মালিকানা ও কর্তত্ব গুগল বহন করে। এখানে আপনি শুধুমাত্র একজন ব্লগ প্রকাশক।
অন্যদিকে WordPress.org হলো একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও ওপেন সোর্স কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ( CMS ) যা আপনি ফ্রি ডাউনলোড করে নিজস্ব হোস্টিংয়ে ব্যবহার করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে ব্লগের সম্পূর্ণ মালিকানা আপনার হাতে। তাছাড়া, নিজের সুবিধা হিসেবে ব্লগের হোস্টিং সার্ভার চেঞ্জ করা, ব্যাকআপ নেয়া এবং আরো সব ধরণের মালিকানা অধিকার সম্পূর্ণ রূপে আপনার হাতেই থাকবে।
যেকোনো ক্ষেত্রে, আপনার অনুমতি ছাড়া আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার কারো থাকবেনা, যদি আপনি WordPress ব্যবহার করে ব্লগ তৈরি করেছেন।
খরচ
Blogger.com এ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আপনি হোস্টিং ও সাবডোমেইন ব্যবহার করতে পারবেন। যদি আপনি কাস্টম বা টপ লেবেল ডোমেইন ব্যবহার করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে শুধু ডোমেইনের খরচ বহন করতে হবে। এজন্য ব্লগার কোনরূপ চার্জ গ্রহণ করে না।
অন্যদিকে WordPress.org যেহেতু নিজস্ব ডোমেইন এবং হোস্টিংয়ে ব্যবহার করতে হয় তাই আপনাকে ডোমেইন এবং হোস্টিং বাবদ একটি নির্দিষ্ট অর্থ বহন করতে হবে। খরচটি ডোমেইনের জন্য বাৎসরিক এবং হোস্টিংয়ের জন্য হোস্টিং ধরন অনুযায়ী দৈনিক, মাসিক বা বাৎসরিক হতে পারে। আপনারা Cyber Developer BD থেকে প্রয়োজনীয় ডোমেইন ও হোস্টিং নিতে পারেন। Cyber Developer BD বাংলাদেশের সেরা ডোমেইন হোস্টিং কোম্পানী। ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশের আইটি সেক্টরে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন, হোস্টিং সার্ভিস, ভিপিএস, ওয়েব ডিজাইন, ডেডিকেটেড সার্ভার এর জন্য একটি বিশ্বস্ত প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠান।
ক্ষমতায়ণ ও নিয়ন্ত্রণ
Blogger.com এ আপনার ক্ষমতা সীমিত। ব্লগ প্রকাশক হিসেবে আপনি ব্লগে তিনটি অ্যাকসেস দিতে পারবেন।
১। ব্যক্তিগত ব্লগ : আপনি নিজে ছাড়া অন্য কেউ ব্লগ ভিজিট করতে পারবে না। এ ধরনের অ্যাক্সেসের মাধ্যমে সাধারণত সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ডায়েরি তৈরি করা হয়।
২। নির্দিষ্ট পাঠক ব্লগ : আপনি ইমেইল ইনভাইটেশন পাঠিয়ে নির্দিষ্ট করে দিতে পারবেন কারা কারা আপনার ব্লগের পাঠক হবে। সেক্ষেত্রে অন্য কেউ ব্লগ পড়তে পারবে না কিংবা পাঠক হওয়ার জন্য অনুরোধও করতে পারবে না।
৩। সার্বজনিন ব্লগ : এক্ষেত্রে যে কেউ চাইলে বিশ্বের যে কোন প্রান্ত হতে আপনার ব্লগ পাঠ করতে পারবে। তবে আপনি চাইলে ব্লগের নির্দিষ্ট কোন পেজ বা পোস্ট প্রাইভেট বা নির্দিষ্ট করতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে অবশ্যই সম্পূর্ণ ব্লগ প্রাইভেট বা নির্দিষ্ট করে দিতে হবে।
ব্লগারে আপনার নিয়ন্ত্রণ সীমিত। এখানে আপনি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। যেমন ডাটাবেসের নিয়ন্ত্রণ আপনার হাতে থাকবে না। আপনার পোস্ট, পেজ বা ক্যাটাগরি ইউআরএল ( URL ) স্ট্রাকচার নির্ধারণ করে দিতে পারবেন না।
অন্যদিকে, WordPress.Org ব্লগের সম্পূর্ণ ক্ষমতা আপনার হাতে। আপনি চাইলে সম্পূর্ণ ব্লগ বা ব্লগের পেজ বা পোস্টসমূহ প্রাইভেট বা নির্দিষ্ট করে দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই থিম কাস্টমাইজ করতে হবে বা কোন প্লাগইন ব্যবহার করতে হবে।
ওয়ার্ডপ্রেসে ডাটাবেস থেকে শুরু করে সকল কিছুই আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আপনি নির্ধারণ করতে পারবেন কেমন হবে আপনার পোস্ট, পেজ এবং ক্যাটাগরি স্ট্র্যাকচার।
পরিধি
ব্লগার দ্বারা আপনি ব্যক্তিগত পোর্টফলিও থেকে শুরু করে কোম্পানির ওয়েবসাইট, কমিউনিটি ব্লগ, নিউজ সাইট, ই-কমার্স সাইটসহ আরও বেশ কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এর পরিধি তেমন বৃহৎ নয়। যেমন, কমিউনিটি ব্লগে ইচ্ছেমত লেখকের অনুমতি দিতে পারবেন না। তাছাড়া সকল ক্ষেত্রেই সরাসরি রেজিস্ট্রেশন সুবিধা দিতে পারবেন না।
অপরদিকে WordPress.Org যেহেতু ওপেন সোর্স সিএমএস ( CMS ) তাই আপনি প্রয়োজনমত কাস্টমাইজড করে প্রায় সকল ক্ষেত্রেই ব্যবহার করতে পারবেন। এর সাহায্যে ব্যক্তিগত পোর্টফলিও থেকে শুরু করে বিশালাকার কমিউনিটি ব্লগ, নিউজ সাইট, কোম্পানি ওয়েবসাইট, পোর্টফোলিও, ফোরাম, সার্চ ইঞ্জিন, ই-কমার্স সাইট সহ প্রায় সব ধরনের সাইট তৈরি করতে পারবেন। অনলাইনে এর ব্যবহার ও পরিধি সর্ববৃহৎ।
এসইও
ব্লগার যেহেতু সর্ববৃহৎ টেক জায়ান্ট গুগলের মালিকাধীন তাই এটি ডিফল্টভাবেই এসইও ফ্রেন্ডলি । আপনি যদি এসইও সম্পর্কে একেবারেই জিরো হন সেক্ষেত্রে ব্লগারের চেয়ে ভালো কোন প্লাটফর্ম আর নেই। ব্লগারে অন্য যেকোন প্লাটফর্মের চেয়ে ইমেইজ খুব ভালো এসইও র্যাংক করে। তবে ব্লগারে অ্যাডভান্স লেবেলের এসইও সম্ভব নয়।
ওয়ার্ডপ্রেস ডিফল্টভাবে এসইও স্ট্র্যাকচার ফলো করে না। তবে এটি বেশ এসইও ফ্রেন্ডলি। কিছু সেটিং ঠিক করে নিলে ও পার্মালিংক মেথড “পোস্ট” করে দিলে সার্চ র্যাংকিয়ে বেশ ভালো ফল পাওয়া যায়। তাছাড়া বিভিন্ন প্লাগইন যেমন; Yoast Seo, Rank Math , SEOPress সহ বেশকিছু প্লাগইন ব্যবহার করে অ্যাডভান্স লেবেলে এসইও করা সম্ভব।
সিকিউরিটি
ব্লগের জন্য সিকিউরিটি অনেক বড় একটা ফ্যাক্টর। ব্লগার যেহেতু সরাসরি গুগলের নিজস্ব সার্ভার দ্বারা পরিচালিত হয় তাই এর সিকিউরিটির দায়িত্ব সম্পূর্ণরূপে গুগলের ওপর। যদি আপনার পাসওয়ার্ড সংক্রান্ত কোন দূর্বলতা না থাকে তাহলে বলা যায় আপনার ব্লগ ৯৯.৯৯% সিকিউর। সেক্ষেত্রে আপনার ব্লগ হ্যাক করতে হলে প্রথমে গুগলের সার্ভার হ্যাক করতে হবে। তাছাড়া, Blogger এর ক্ষেত্রে, আপনাদের গুগলের robust, secure platform এর সুবিধা দেয়া হয়। এই ক্ষেত্রে, আপনার নিজের থেকে ব্লগের কোনো ধরণের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে হবেনা। ব্লগের ব্যাকআপ তৈরি করা, সার্ভার রিসোর্স ম্যানেজ করা বা ব্লগের নিরাপত্তা সবটাই “robust, secure platform” দ্বারা নিজে নিজে ম্যানেজ করা হয়। কিন্তু, এই ক্ষেত্রে একটি অসুবিধাও রয়েছে। Blogger এর সার্ভার যখন ডাউন থাকবে, তখন আপনার ব্লগ ও ডাউন থাকবে এবং service resume করার জন্য আপনি কিছুই করতে পারবেন না।
ওয়ার্ডপ্রেসও বেশ সিকিউর একটা প্লাটফর্ম। তবে ওয়ার্ডপ্রেসে যেহেতু নানা ধরনের প্লাগইন ও থিম ব্যবহার করা হয় তাই ওয়ার্ডপ্রেসে কোন সিকিউরিটি দূর্বলতা না থাকলেও এসব থিম বা প্লাগইনে দূর্বলতা থাকলে আপনার সাইটের ক্ষতি হতে পারে। ওয়ার্ডপ্রেসে বিভিন্ন ধরনের প্লাগইন যেমন; Wordfence, Sucuri Security, All In One WP Security & Firewall ব্যবহার করে সিকিউরিটি বাড়ানো যায়। ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress) দ্বারা তৈরিকৃত ওয়েবসাইট যেহেতু নিজের খরচে হোস্টিংয়ে ব্যবহার করতে হয় তাই এর সকল সিকিউরিটি বা নিরাপত্তা আপনাকে বহন করতে হবে।
কাস্টমাইজেশন
ব্লগারের কোড কাস্টমাইজেশন তুলনামূলক সহজ । সামান্য এইচটিএমএল ( HTML ) ও সিএসএস ( CSS ) জ্ঞান থাকলে আপনি সহজেই এর থিম কাস্টমাইজ করতে পারবেন। ব্লগারে প্লাগইন ব্যবহারের সুযোগ না থাকায় আপনি ইচ্ছেমত কাস্টমাইজড করতে পারবেন না। যদিও ব্লগারে সামান্য কিছু উইজেড রয়েছে যা আপনি সাইডবার, হেডার বা ফুটারে ব্যবহার করে সামান্য কিছু ফাংশনালিটি বাড়াতে পারবেন।
ওয়ার্ডপ্রেসের কোড কাস্টমাইজেশন ব্লগারের তুলনায় কঠিন। এজন্য আপনার এইচটিএমএল ( HTML ) ও সিএসএস ( CSS ) পাশাপাশি পিএইচপি ( PHP ) জ্ঞানও থাকতে হবে। তবে ওয়ার্ডপ্রেসের রয়েছে অনেক ফ্রি ও পেইড প্লাগইন যা ব্যবহার করে আপনি আপনার প্রয়োজনমত ওয়েবসাইটকে কাস্টমাইজ করতে পারবেন।
সহজবোধ্যতা
ব্লগার পরিচালনা করা খুবই সহজ। আপনি সামান্য কয়েক মিনিটের মধ্যে শিখে ফেলতে পারবেন এর ব্যবহার বিধি। এর ফাংশনালিটি কম হওয়ায় এর ড্যাশবোর্ডও বেশ পরিস্কার ও গোছালো।
ওয়ার্ডপ্রেস পরিচালনা করাও বেশ সহজ। তবে ব্লগারের চেয়ে ফাংশনালিটি বেশি হওয়ায় এর ড্যাশবোর্ডে মেনুর সংখ্যাও বেশি। এর ড্যাশবোর্ডও বেশ পরিস্কার ও গোছালো।
ভবিষ্যৎ
Blogger এবং WordPress দুইটার ই ভবিষ্যৎ অনেক ভালো। তবে, কিছু বছর থেকে blogger ব্যবহার অনেক বেশি পরিমানে কমে গেছে এবং অধিক বেশি পরিমানে “WordPress” ব্যবহার করে ব্লগ তৈরি করা হয়েছে। আসলে, আজকাল ব্লগিংকে লোকেরা নিজের ক্যারিয়ার হিসেবে কাজ করতে চায়। তাই, প্রত্যেকেই প্রফেশনাল ব্লগিং করার জন্য একটি প্রফেশনাল ব্লগিং প্লাটফর্ম ব্যবহার করার ইচ্ছা রাখেন। এবং, এই ক্ষেত্রে “WordPress” অবশ্যই একটি প্রফেশনাল ব্লগিং প্লাটফর্ম বলে প্রত্যেক বার প্রমাণিত হয়েছে তাই, blogger এর তুলনায় WordPress এর ভবিষ্যত অনেক উজ্জ্বল।
ব্লগার সম্পূর্ণরূপে গুগলের সম্পত্তি হওয়ায় এর ভবিষ্যৎ সম্পূর্ণরূপে গুগলের নিজের ওপর নির্ভর করে। আমরা গুগল রিডার, অ্যাডসেন্স ফর ফিড সহ গুগলের বেশ কিছু জনপ্রিয় সেবা বন্ধ হয়ে যেতে দেখেছি। তাছাড়া গুগল যে কোন সময় আপনার কোন পোস্ট বা সম্পূর্ণ ব্লগ মুছে ফেলার অধিকার রাখে। তবে আপনি যদি কপি ব্লগিং কিংবা ব্লগারের শর্ত ভঙ্গ না করেন তবে কখনই আপনার ব্লগ ডিলিট হবে না এটুকু নিশ্চিত থাকতে পারেন। এছাড়াও ব্লগারের আপডেট বেশ ধীরগতির। তবে বর্তমানে ব্লগারের বেশ কিছু আপডেট তাড়াতাড়ি দেখা গেছে।
অপরদিকে, ওয়ার্ডপ্রেস যেহেতু একটি কমিউনিটি দ্বারা পরিচালিত হয় তাই এর ভবিষ্যৎ কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা কোম্পানীর ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে না। তাছাড়া এর আপডেট তুলনামূলক দ্রুত আসে।
অন্যান্য সুবিধা ও অসুবিধা
ব্লগার প্লাটফর্ম ব্যবহারকারী হিসেবে আপনি ব্লগস্পট সাবডোমেইন বা আপনার কাস্টম টপ লেবেল ডোমেইনে দ্রুতগতি সম্পন্ন হোস্টিং ও এসএসএল ফ্রি পাচ্ছেন। ব্লগারে কনটেন্ট হিসেবে টেক্স, ইমেইজ ও ভিডিও আপলোড করার সুযোগ থাকলেও অন্যান্য ফাইল সরাসরি আপলোড করতে পারবেন না। তবে গুগল আপনাকে ফ্রি ১৫ জিবি ক্লাউড স্টোরেজ দিচ্ছে যেখানে আপনি এসকল ফাইল স্টোর করতে পারবেন।
অন্যদিকে,ওয়ার্ডপ্রেসে আপনি ইচ্ছেমতো সবকিছু করতে পারলেও তার জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট হারে খরচ বহন করতে হবে। অর্থাৎ, ভালো ডোমেইন ও হোস্টিং প্রভাইডার থেকে ডোমেইন ও হোস্টিং কিনে আপনার ওয়েবসাইট হোস্ট করতে হবে।
পরিশেষে বলতে চাই, WordPress এবং blogger দুটোই অধিক বেশি পরিমানে ব্যবহার করা ব্লগিং সফটওয়্যার । যেহেতু, দুটো প্লাটফর্ম এর নিজের বিশেষ বৈশিষ্ট রয়েছে, তাই কোন প্লাটফর্ম আপনার জন্য ভালো এবং সেরা, সেটা আপনার নিজেরই ঠিক করতে হবে। যদি, আপনি একটি সাধারণ ব্লগ তৈরি করে নিজের স্টোরি শেয়ার করতে চান, তাহলে “Blogger” বেছে নিতে পারেন।
কিন্তু, যদি আপনার উদ্যেশ্য একটি প্রফেশনাল ব্লগ তৈরি করা, যেটার মাধ্যমে আপনি ভবিষ্যতে ভালো পরিমানে টাকা ইনকাম করতে পারবেন, তাহলে আপনার প্রয়োজন হবে “WordPress” এর মতো একটি শক্তিশালী এবং অ্যাডভান্স প্লাটফর্মের।
আমাদের পরামর্শ হলো, ব্লগার কোনো মতেই একটি খারাপ প্লাটফর্ম না। কিন্তু, WordPress অন্য প্লাটফর্ম গুলির তুলনায় অনেক বেশি পরিমানে ভালো, অ্যাডভান্সড এবং শক্তিশালী যেটা প্রত্যেক ব্লগারকে ব্যবহার করার পরামর্শ দেব।